12 October 2018

পঞ্চরত্ন শিবমন্দির

রাজশাহী-নাটোর মহাসড়ক হতে দক্ষিণে গিয়ে পুঠিয়া রাজবাড়ি এলাকায় প্রবেশপথের পূর্ব পাশের শিব সরোবরের দক্ষিণ তীরে অবস্থিত সুউচ্চ এই মন্দিরটি পুঠিয়ার মন্দির স্থাপত্যের এক অনন্য নিদর্শন। সুউচ্চ (১১ইঞ্চি-৮ইঞ্চি) ও সুবিশাল এক বর্গাকার (65ইঞ্চি-0ইঞ্চি×65ইঞ্চি-0ইঞ্চি) মঞ্চের উপর এক কক্ষ বিশিষ্ট এই মন্দিরটির প্রতিটি রত্নের উপরিভাগ ক্রমান্বয়ে সজ্জিতাকারে স্থাপিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কতকগুলো সুঁচালো চূড়ায় আচ্ছাদিত। কেন্দ্রীয় কক্ষের অভ্যন্তরে কৃষ্ণপ্রস্তরে নির্মিত একটি বিশালাকৃতির শিবলিঙ্গ স্থাপিত রয়েছে। কেন্দ্রীয় কক্ষ ও তার চারিদিকের প্রদক্ষিণ বারান্দার চার কোণের অভ্যন্তরস্থ উপরিভাগ
অর্ধবৃত্তাকৃতির গম্বুজে ও চার বলয় চৌচালা ছাদে আচ্ছাদিত। প্রদক্ষিণ বারান্দার চারিধার মোগল রীতির খাঁজখিলান পথে উন্মুক্ত। মন্দিরটির সুউচ্চ মঞ্চে আরোহণের জন্য উত্তর ও দক্ষিণ পাশে দুটি সিঁড়িপথ বিদ্যমান। ১৮২৩-১৮৩০ সনে রাজা জগন্নারায়ণের স্ত্রী রানি ভুবনময়ী এটি নির্মাণ করেন। এটি নির্মাণে সে সময় তিন লক্ষ মুদ্রা ব্যয় হয়েছিল বলে জানা যায়। পূর্বে মন্দিরায়তনের দ্বারের নিকট একটি জলঘড়ি ছিল যা বর্তমানে নেই।
জনৈক আচার্য ব্রাহ্মণ তা পরিচালনা করতেন বলে জানা যায়। মন্দিরটির নির্মাণ কৌশল ও অলঙ্করণ অপূর্ব। এই মন্দিরের সৌন্দর্য উপভোগের লোভ স্বয়ং লর্ড কারমাইকেলও সংবরণ করতে না পেরে একদা তিনি এ মন্দির দর্শনের জন্য সকলের অগচোরে পুঠিয়ায় প্রবেশ করেছিলেন বলে জানা যায় (সূত্র: বিমলাচরণ মৈত্রেয়, পুঠিয়া রাজবংশ, কলকাতা: প্যারিস আর্ট প্রেস, ১৯৫৩)।

No comments: