12 October 2018

পঞ্চরত্ন বড় গোবিন্দ মন্দির


 

পাঁচ আনি রাজপ্রাসাদের অভ্যন্তরে পূর্ব অংগনের (মন্দিরাঙ্গন) মধ্যস্থলে এই মন্দিরটি অবস্থিত। একটি সুউচ্চ বর্গাকার মঞ্চের উপর স্থাপিত মন্দিরটির ভূমি নকশা পঞ্চরত্ন শিবমন্দিরের মতই। তবে মন্দিরটির বহির্দেয়ালগাত্রের সম্পূর্ণ অংশ দিনাজপুরের কান্তনগরের নবরত্ন মন্দিরের ন্যায় পোড়ামাটির ফলক দ্বারা অপূর্ব অলঙ্করণে সজ্জিত।

অলঙ্করণ বিষয়বস্তু হিসেবে রামায়ণ-মহাভারতের বিভিন্ন ঘটনাবলী উপস্থাপনের পাশাপাশি মুসলিম স্থাপত্য অলঙ্করণের বীমূর্ত বিষয়বস্তুসহ তদানীন্তন সমাজ ব্যবস্থারও একটা প্রতিচ্ছবি তুলে ধরা হয়েছে। ভূমি নকশা অনুযায়ী মন্দিরটি মূল গর্ভগৃহকে কেন্দ্র করে মূলত পাঁচটি বর্গাকার ও চারটি স্বল্প আয়তনের আয়তাকার কক্ষে বিভক্ত। চারদিকের আয়তাকার কক্ষ চারটি প্রকৃতপক্ষে বারান্দা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

বর্গাকার কক্ষ সমূহের অন্তরস্থ উপরিভাগ অর্ধবৃত্তাকৃতির গম্বুজ ও আয়তাকার কক্ষ বা বারান্দা সমূহের উপরিভাগ খিলানছাদে (ছই আকৃতির) আচ্ছাদিত হলেও বহির্ভাগ সমতল করে কেন্দ্রীয় কক্ষ এবং চার কোণার ক্ষুদ্র কক্ষ চারটির উপরে পাঁচটি রতন্ স্থাপিত হয়েছে। রত্ন সমূহের উপরিভাগ পিরামিড আদলের চৌচালা ছাদে আচ্ছাদিত। মন্দিরের চারদিকের বারান্দাসমূহ তিনটি করে অর্ধবৃত্তাকার খাঁজখিলান পথে উন্মুক্ত।

মন্দিরটি কে, কখন নির্মাণ করেছিলেন তা সঠিকভাবে বলা যায় না। তবে মন্দিরটির পশ্চিম বহির্দেয়ালগাত্রের শীর্ষভাগে স্থাপিত একটি ভগ্ন শিলালিপিতে প্রেমনারায়ণস্য দৃষ্টে পুঠিয়া রাজবংশ গ্রন্থের লেখক বিমলাচরণ মৈত্রেয় অনুমান করেছেন যে, হয়তোবা মন্দিরটি রাজা প্রেমনারায়ণ কর্তৃক নির্মিত হয়েছিল। তাঁর এই অনুমান যথার্থ হলে মন্দিরটি অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষার্ধে নির্মিত বলে ধরে নেয়া যেতে পারে।

No comments: